Tuesday, January 25, 2022

মানবিকতার ভাষা!! প্রেমের ভাষা।

 মানবিকতার ভাষা!! প্রেমের ভাষা।



খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দ থেকে বাংলায় হিন্দু ব্রাহ্মণগণ সংস্কৃত ভাষার চর্চা করত, কিন্তু স্থানীয় বৌদ্ধরা প্রাকৃত ভাষার কোন কোন রূপে (ভ্যারাইটি) কথা বলত, যাকে ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন মাগধী প্রাকৃতের পূর্ব রূপ বা ভ্যারাইটি হিসেবে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়, বাংলা ছিল হিন্দু যাজক বা পুরোহিতদের জন্য সংস্কৃত সাহিত্যের একটি কেন্দ্র, যা স্থানীয়দের কথ্য ভাষাকে প্রভাবিত করে।প্রথম সহস্রাব্দে বাংলা যখন মগধ রাজ্যের একটি অংশ ছিল তখন মধ্য ইন্দো-আর্য উপভাষাগুলি বাংলায় প্রভাবশালী ছিল। এই উপভাষাগুলিকে মাগধী প্রাকৃত বলা হয় এবং এটি আধুনিক বিহার, বাংলা ও আসামে কথিত হত। এই ভাষা থেকে অবশেষে অর্ধ-মাগধী প্রাকৃতের বিকাশ ঘটে।প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে অর্ধ-মাগধী থেকে অপভ্রংশের বিকাশ ঘটে। সময়ের সাথে সাথে বাংলা ভাষা একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়।


এতো গেলো বাংলা ভাষার উৎপত্তির ইতিহাসের কথা। এবার প্রশ্ন আসে মানবিকতার ভাষা কি ? প্রশ্ন আসে নিজের গৃহ পালিত পশুকে মানুষ কোন ভাষায় ভালোবাসে? মাতৃত্বের ভালবাসার ভাষা কি? সে ভালোবাসা ভাষাবিদরা কোন ভাষার অন্তর্ভুক্ত মনে করেন ? প্রকৃতির প্রতি যে ভালোবাসা জন্মায় তাকে কোন ভাষায় নামকরণ করা হয় ? ভক্তের সাথে ভগবানের ভালোবাসাকে বিশ্ব কি নামে চেনে?


এর উত্তর গুলো আমি সে ভাষাবিদদের কাছে জানতে চাই, যারা পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশে যুক্ত করার চক্রান্ত চালাচ্ছে। জানতে চাই তাদের কাছে, যারা ভারতের অখন্ডতা ভুলে গিয়ে যারা মুম্বাইতে মারাঠি ভাষার প্রাধান্য দিয়ে অন্য রাজ্যের মানুষকে কাজ করতে বাধা দেয়?


 যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ কায়েম করতে এটা বোঝায় ভারতের মানুষ ভারতের মানুষের শত্রু। তারা এটা জানে না সেই ভাষাই সুন্দর যে ভাষা প্রেমের কথা বলে।। জানে না কারণ প্রেম অসুরের প্রবৃত্তি নয়।


ভাষার উন্নতি কিসে? ভাষাকেন্দ্রিক প্রতিবাদে না ভাষায় সাহিত্য রচনায়। যাদের সাহিত্য পড়ে আমরা বড় হয়েছি, তারা কি ভাষাকেন্দ্রিক প্রতিবাদে আমাদের ভাষার মর্যাদা বাড়িয়েছেন! না ভাষায় অমর সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে এই কাজ করেছেন ? এবার প্রশ্ন আসে গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলা ভাষায় অমর গান রচনা করতে, ধর্ণা দিতে হতো, না তাকে একাত্ম হয়ে গান লিখতে হতো? ধর্ণা দিলে উনি গান লিখতেন কখন সেই বিষয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। যেখানে শিল্পীর শিল্পীসত্তা কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পরে, তাদের থেকে কি যুগান্তকারী শিল্পভাবনা আপনারা আশা করতে পারেন?


 সত্তাহীন সৃষ্টিতে আত্মা থাকে না, থাকে  কমার্শিয়ালিটি। যা মুনাফার উদ্দেশ্যে তৈরি করা। মুনাফায় তার ব্যক্তিগত ভালো হতে পারে,  ভাষার ভালো হতে পারেনা।


   বাঙালি বাংলা ভাষায় গল্পের বই পড়তে চায় না।

বাঙালি বাংলা গান শোনার প্রতি আগ্রহ ক্রমশ হারাচ্ছে। 

এগুলো কাদের অক্ষমতা, আমাদের সাহিত্য সৃষ্টি করার অক্ষমতা, না হিন্দি ভাষার প্রসার। প্রশ্ন থাকলে নিজের অন্দরমহলে প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন।


Aveek Chowdhury

No comments:

Post a Comment

আপনার বর্তমান পরিচিতি, আপনার অতীতের চিন্তার ফল

 মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক এমন এক আশ্চর্য শক্তি যা সর্বদা আপনার সাথে থাকে। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা ফেলু...