Tuesday, January 25, 2022

'ফ্রি' একটি ফাঁদ

 আমরা কোন পথে হাঁটছি! এ সমাজে একজন অভিনয় করার বিনিময়ে লক্ষধিক কি কোটি টাকা উপার্জন করে। কেউ ক্রিকেট খেলে 7 কোটি টাকার বেশী আয় করে। যদি তার ক্যাটাগরি ভারতীয় দলে A+ হয়। গত বছর আমি নিজের পাড়াতে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানে সাত-আট বছরের বাচ্চা মেয়েদের যে গানটিতে মঞ্চে নাচতে দেখেছিলাম, গানটি ছিলো “ও শারাবি ক্যা শারাবি যো নাশে মে না রহে।” 


এই দেশের সীমান্ত রক্ষায় সিয়াচিন বর্ডারে হিমাঙ্কের অনেক নিচে থাকা তাপমাত্রায় যে সেনা নিয়োগ থাকে, তার বেতন বিরাট কোহলির এক হপ্তার পানীয় জলের খরচ। কঠিন হলেও এটাই বাস্তব। অথচ বিরাট কোহলি শুধু মাত্র আমাদের বিনোদন করে। আর সেনা সীমান্ত রক্ষায় জীবন দেয়। তারা দেশের সীমান্তর এমন স্থান রক্ষা করতে ব্যস্ত যেখানে বিনোদন শব্দটিও পৌছায় না। আবার সেই ভারতেই ভাষাবাদী আর জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হয়। দেশের ভিতরের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একে ওপরের চেয়ে বেশী প্রাধান্য দাবী করে। দেশের অখন্ডতাকে বিসর্জন দেওয়ার চেষ্টা করে।


 সেই ভারতেই সাধারণ মানুষকে তাদের জননেতারা পণ্য দ্রব্য মনে করে। 500 টাকা একাউন্টে ফ্রিতে ঢুকে পরে। মানুষ তাতে সন্তুষ্ট হয়ে যায়। তারা বোঝেনা এই পৃথিবীতে কিছুই ফ্রি'তে আসে না। যখন কিছু ফ্রি দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে প্রোডাক্ট সে নিজে। ফ্রি দিয়ে তাকেই ক্রয় করা হচ্ছে। কিনে ফেলা হচ্ছে তার সত্তাকে। কিনে নেওয়া হচ্ছে তার কর্মক্ষমতা। কিনে ফেলা হচ্ছে তার প্রশ্ন করার অধিকার। নিজের অজান্তে সে পরিণত হচ্ছে পণ্যে। 

 এই দেশে মহামারীতে পানশালা খোলা থাকে, বন্ধ থাকে পাঠশালা। আমরা কোন অযোগ্য মানুষের হাতে শাসনভার তুলে দিয়ে রেখেছি। যারা এটা বিশ্বাস করে, দেশের অর্থনীতি সচল থাকে মদ বিক্রিতে। আর ব্যর্থ হয় শিক্ষা সচল থাকলে।


 

জনগণ আজ আর প্রশ্ন করেনা। কারণ তারা ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়াতে কারো না কারো কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আর বিক্রি হওয়া ক্রীতদাসরা মালিককে প্রশ্ন করার অধিকার হারায়।।


Aveek Chowdhury

No comments:

Post a Comment

আপনার বর্তমান পরিচিতি, আপনার অতীতের চিন্তার ফল

 মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক এমন এক আশ্চর্য শক্তি যা সর্বদা আপনার সাথে থাকে। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা ফেলু...