নিজেকে বদলে ফেলবো, এমন কথা আমরা হামেশাই হুঙ্কার দিয়ে বলি। হয় বন্ধু-বান্ধবের সামনে। না হলে বাবা-মায়ের সম্মুখে। নতুবা মনে-মনে শপথ নি। এতে কিছুই হয় না। বরং একটা মিথ্যে বাড়ে।
যে অভ্যাস গভীরে, তাকে অগভীর চিন্তাশক্তি দিয়ে বদলানো একপ্রকার অসম্ভব। যে চোখ দৈনন্দিন বিনোদনে অভ্যস্ত তাকে রাতারাতি ওয়াশ করা সম্ভব নয়। সমালোচনায় যারা শান্তি খোঁজে, তাদের কাছে পরোক্ষ ভাবে অশান্তিই কাম্যতা। যে মন ভালোবাসার পিছনে শুধু আমার-আমার করে নাচে, তাকে সবার জন্য বিলিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়...
মানুষের কাছে কোনো অখাদ্য নায়কের যুক্তিহীন তিন ঘন্টার সিনেমা দেখার সময় আছে। বাইশ জন মানুষ ক্রিকেট খেলবে, সেই খেলা দেখে তাদের ধনী করার সময় আছে। অথচ তাকে গীতা পড়ার রাস্তা দেখালে তার কাছে সময় কম পরে যায়।
আবার সেই মানুষই ভুলে ভরা জীবনের একের পর এক ভুলকে স্মরণ করে। হতাশায় ভেঙে নিজেকে দোষারোপ করে ঘন্টার পর ঘন্টা চিন্তা করে সময় ব্যয় করে। এদিকে গীতার দুটো শ্লোক পড়া তার কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে।
নেশায় আর আসক্তিতে জীবনের সব সব মূল্যবোধ বিকিয়ে দিয়ে ভগবানকে দোষারোপ করে সাময়িক শান্তি লাভের মূর্খ চেষ্টা। কিন্তু ভগবান কি বলে গেছিলেন, সেগুলো পড়ার জন্য তার একটা দিন সময় হয়নি। একটা পশু ও মানুষের মধ্যে পার্থক্য -- মানুষ ভগবানকে উপলব্ধি করতে সক্ষম। তবুও ইচ্ছে হয়না মানুষের তাকে উপলব্ধি করার।
বৃদ্ধাশ্রমে বসে বৃদ্ধ পিতা-মাতা ভাবে নিজের সন্তান তাদেরকে এই ঠিকানা দিলো, কেন দিলো? সেটা ভাবতে পারে কি ? সেখানেও আমি এসে বাধ সাধে। আমি এতো কিছু করলাম তাতেও এই পরিণতি। একটা কাজও কি ভগবানের নির্দেশ মতো করা ছিলো। যদি না হয়, তবে নরকের পরিণতি ভবিতব্য। সবার দোষ খুঁজে বার করা শেষ হলে, ভগবানের দোষ দেওয়া শুরু। ভগবানের নির্দেশ মতো জীবনে একটা দিন কি কেউ কাটিয়েছিলো? কি নির্দেশ ছিল তার! সেই সম্পর্কে কিছু কি ধারনা আছে? নাকি নিজের মনগড়া ভগবানের নির্দেশ ? না কোনো সিনেমা সিরিয়ালের ভগবানকে দেখে শেখা। নিজের মনের মত মনগড়া ভগবানের তাদের মতোই ফলাফল। ভগবানকে চিনতে ভগবতগীতার আশ্রয় নিন। নিজের কল্পনার বা টিভি-সিরিয়ালের নয়..
No comments:
Post a Comment